অনলাইন সীমান্তবাণী ডস্কে : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তার দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার বদলে বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যস্থতা করতে এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর।
জাতিসংঘের নিউজ পোর্টাল ইউএননিউজ জানায়, ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যাপয়ের বিতর্কে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, চীন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে ‘শান্তির জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর একটি দল’ গঠন করেছে। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতিমালা সমুন্নত করা, সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং শান্তির সম্ভাবনাকে জোরদার করা।
ওয়াং ই বলেন, ফিলিস্তিন সমস্যা মানব বিবেকে সবচেয়ে বড় ক্ষত। গাজা যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং লেবাননে আবারো যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ক্ষমতা কখনো ন্যায়বিচারে স্থান নিতে পারে না। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘস্থায়ী আকাক্সক্ষা এবং তাদের প্রতি কয়েক দশকের অনাচার আর উপেক্ষা করা উচিত নয়।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফ্রিকান দেশ এবং বিশ্বের কিছু স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এর সাথে তার অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, তার দেশ বাণিজ্য পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় একতরফাভাবে নিষেধাজ্ঞা, অবরোঢ় ও বিধিনিষেধ আরোপ করবে না।
বিধিনিষেধ ও চাপ দিয়ে একচেটিয়া প্রতিষ্ঠা করা যায় না। অন্যকে দমন ও বিচ্ছিন্ন করে ঘরোয়া সমস্যা সমাধান করা যায় না। তিনি কিউবার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে এবং এর জনগণকে সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য সমস্ত দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিবেশ বান্ধব শক্তির সর্বজনীন ব্যবহার, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং টেকসই উন্নয়নে তার দেশের প্রতশ্রতির তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চীন এমন একটি দেশে পরিণত হবে যেটি স্বল্পতম সময়ে কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জন করবে এবং মানবতা ও প্রকৃতির মধ্যে প্রীতিময় সহাবস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু ইস্যুতে যৗথ ও একাধিক দায়িত্বের নীতি বজায় রাখতে হবে এবং জলবায়ুু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে প্যারিস চুক্তিকে সরল বিশ্বাসে বাস্তবায়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের সক্ষমতা তৈরিতে উন্নত দেশগুলোর যথাসাধ্য সাহায্য করা উচিত।
ওয়াং ই জাতিসংঘের সংস্কার, আধুনিকীকরণ এবং বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থাকে আধুনিক প্রয়োজনীয়তার সাথে সমন্বয়ের জন্য চীনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, তার দেশ আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি প্রদানের মাধ্যমে এ ব্যাপারে তার দায়িত্ব পালন করবে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর ন্যায্য দাবি শুনতে এবং দক্ষিণ বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, চীন জাতিসংঘের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলো পুনর্নবীকরণ করতে সকল েেশর সাথে কাজ করতে প্রস্তুত এবং সংস্থার সনদের প্রতি তার অবিচল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। চীন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের জন্য একটি প্রকৃত বহুপক্ষীয় পদ্ধতির সমর্থন করে এবং সকল মানুষের জন্য সমানভাবে একটি উন্নত বিশ্ব গড়তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একত্রে কাজ করবে।
Leave a Reply